মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ

"ঐতিহ্যের নীলায় সাহিত্যের জয়গান"

আমাদের পরিচয়

“মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ”

“মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ” হলো একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সাহিত্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের উত্তরের জেলা রংপুর যা উত্তর বঙ্গের কেন্দ্রবিন্দু হাজার বছর ধরে।আর এ রংপুরের আদিপ্রান হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাহিগঞ্জ। হেকিমী ওষুধ ও কাচ তৈরীর জন্য বিখ্যাত ছিল মাহিগঞ্জ। এটা সাধারন কথা তবে অসাধারন কি? বাংলাদেশের প্রথম ছাপাখানা কোথায় ছিল বলুন তো?... হ্যাঁ, মাহিগঞ্জেই ছিল। এমন জায়গায় আমরা কিছু তরুন সাহিত্যপ্রেমী গড়ে তুলেছি "মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ"। যেটার সাথে বটবৃক্ষের ছায়া হয়ে আছেন

প্রবীন সাহিত্যিক-- 'কাব্যনিধি' মতিয়ার বসনিয়া। আছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা, সাহিত্যিক মোনালিসা রহমান !

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে লেখনি ধারণ করে সাহিত্যের মাধ্যমে আঞ্চলিকতা সংরক্ষন ও তার গৌরব, সম্মান উচ্চ স্থানে পৌছে দেওয়া সাথে সাথে জাতীয় শিক্ষা, সংস্কৃতির প্রচার ও প্রশার ঘটানোর দ্বারা ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বজায় রাখা “মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ” উদ্দেশ্ ।

“মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ” দুটি বিভাগে বিভক্ত , বিভাগ দুটি হলো: লেখক ফোরাম ও পাঠক ফোরাম।

# লেখক ফোরাম:

যারা সাহিত্য চর্চা ও লেখালেখির সাথে নিয়মিত, ওতপ্রোত ভাবে জড়িত থাকবে তারাই শুধু এর সদস্য হতে পারবে।

# পাঠক ফোরাম:

পাঠক ফোরামের সদস্যরা সাধারণ সদস্য হিসাবে গন্য হবে। তারা একটি সদস্য পদ ফরম পুরনের মাধ্যমে যেকোন সাহিত্যানুরাগী ও বই প্রেমি সকল স্তরের মানুষ এর সদস্য হতে পারবে। এর শাখা প্রতিটি উপজেলায়, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠিত হবে।

মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ ঐতিহ্যের নীলায় সাহিত্যের জয়গান

আমাদের কার্যক্রম

“মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ”

সাহিত্যক সম্মাননা সনদ প্রদান

আঞ্চলিক ও জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষন

সংস্কৃতিক ও মানবিক বিষয়বলি

# লেখক, কবি, সাহিত্যিকদেরকে তাদের সৃষ্টি কর্মের সম্মাননা প্রকাদান করা।

# বিভিন্ন স্কুল, কলেজ পর্যায়ে কবিতা, গল্প, নাটক, উপন্যাস লেখা ও বক্তৃতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে নতুন কচি প্রতিভাবান লেখকদেরকে অনুপ্রেরণা প্রদান করা।

# মাসে চার অথবা দুটি কার্যদিবস, সাহিত্য আসরের আয়োজন করে সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় ও দিক নিয়ে আলোচনা করা।

# ইত্যাদি

  • গল্প ৯০%
  • কবিতা ৭৫%
  • প্রবন্ধ ৬৬%
  • অন্যান্য ৮৮%

আমাদের লেখা

সেরা যত লেখা গুলি
স্নেহাশিস ও ভালোবাসা | তাছনীম বিন আহসান | Bangla Kobita | বাংলা কবিতা

 

স্নেহাশিস ও ভালোবাসা

- তাছনীম বিন আহসান


তোমরা যারা,
রঙিন চশমার পেছন থেকে আমার হাসি দেখো,
কিম্বা স্যুটের কাঁধে ঝুলে থাকা ক্লান্তির রেখা,
তোমরা কি জানো—
আমার বুকের ভেতর অজস্র অরণ্য ডাকে?

আমি অফিসের লিফটে উঠে দেখি,
একেকটা জীর্ণ মুখ যেন সফরের মানচিত্র,
তবু কারো চোখে লেখা থাকে না
আমার নামহীন বিষাদের গল্প-
আকা থাকে রংহীন হাসি।

তোমরা যারা,
ড্রইং রুমের ঝকঝকে সোফায় বসে
আমার কথার ব্যাকরণ খোঁজো,
কিংবা ভাবো,
এই নীরবতা হয়তো কোনো বড়ো কূটচালের নাম—
ভুল ভাবো।

আমি তো সেই ছোট্ট শিশুটি,
যে রঙিন বেলুন রেখে আসে
ভীড়ে ভরা চৌরাস্তার ধারে।
আমি তো সেই বৃষ্টিস্নাত বিকেল,
যার গায়ে এয়ার কন্ডিশনের শীতলতা জমে না।

আমার অন্তর—
গগনচুম্বী টাওয়ারের কাঁচে ঘষা অভিজাত জানালা নয়,
বরং অখ্যাত রেল স্টেশনের ফাঁকা প্ল্যাটফর্ম,
যেখানে অপেক্ষা করে শুধু বাতাসের নিঃসঙ্গ শব্দ।

তোমরা যারা,
ক্যালেন্ডারের পাতায় আমার জন্মদিন মনে রাখো,
কিন্তু ভুলে যাও কোন মৌসুমে আমার দুঃখ ফোটে-
কোন ঋতুতে আমি কি খেতে ভালোবাসি,
তোমরা নিঃসন্দেহে বড়ো অবুঝ,
মেঘের ভেতর তারা খোঁজার চেষ্টায় ব্যস্ত অবুঝ শিশুর মতো।

আমি তো দিনশেষে সেই অক্লান্ত বাউণ্ডুলে যাত্রী,
ক্লান্ত কর্পোরেট ইমেইলের ভেতর থেকেও,
যে ভুল করে লিখে ফেলে একফোঁটা কবিতা-
সাবজেক্ট লাইনে।

আমি তো সেই অন্ধকারে আলো খোঁজা ছেলেটি,
যার পকেটে পুরনো চিঠির পাশে ভাজ করা থাকে-
অদেখা স্বপ্নদের ভিড়।

তোমরা যারা,
আমার চুপচাপ হেঁটে যাওয়া দেখে ভেবে বসো,
আমি হয়তো খুব খুশি—
ভুল করো।
কিছু মুসাফির মিসকিন হয়েই বাচে,
শুধু চুপচাপ হেটেই চলে,
আর জেনে রাখো;
চুপ করে হাঁটা মানে তো কাঁদার আরেক নাম,
শুধু শব্দের মুখোশ পরে থাকে মৌনতা।

তোমরা যারা,
আমার টাইয়ের নটের আঁটসাঁট ভাব-
আর ধোপদুরস্ত কাপড় দেখে ভেবেছো,
আমার হৃদয় বুঝি জমাট—
ভুল করো।
উপরটাতা শুধু জলছাপ,
আর ভেতর "শিশির পড়া সকালের মতো নরম"।

আমাকে বুঝতে গেলে-
অফিসের কার্ড সোয়াইপের হিসাব নয়,
ছাদভরা নক্ষত্র গুনতে শিখতে হয়।
শিখতে হয় চোখের প্রতিবিম্বের ভাষা-
আমি সীমানাহীন এক মহাদেশ,
না-দেখা উপত্যকার নাম,
ভুল করে গাওয়া প্রাগৈতিহাসিক গীতের সুর।

আমি ইতিহাসের হারানো এক নাম,
বাতাসের কাঁধে ভেসে যাওয়া রুপকথার গল্প,
পায়ে হাঁটা পুরনো স্বপ্নের পথ।

তোমরা যারা আমার বাহিরে তাকিয়ে
অন্তরের ম্যাপ আঁকতে চাও—
বাহির ছুঁয়ে ভেতর খুঁজো—
তোমরা আসলে চাঁদের বৃষ্টিতে ভেজা,
মুগ্ধ একদল পথভোলা নিস্পাপ শিশু।


#তাছনীম



চিরন্তন | তাছনীম বিন আহসান | বাংলা কবিতা

 *চিরন্তন*

- তাছনীম বিন আহসান 




নদীর স্রোত কত স্বপ্ন বহন করে!

রাজার কেল্লা, কৃষকের ঘাম—

আর সিন্ধুর ঢেউয়ে মিশেছে যে প্রেম,

যুদ্ধ শেষে নিস্তব্ধ রাতে, কত কণ্ঠস্বর থেমে যায়,

সময়ের গহ্বরে বীরের নামও ঝাপসা হয়ে যায়।

তবু মহাকাল কেবল এক নামেই ডাক দেয়—প্রেম।


ব্যাবিলনের স্তম্ভে জমে থাকা রক্তের গন্ধ,  

মহাকালের কণ্ঠে ভেসে আসে দাসত্বের আর্তনাদ—  

চোখে আঁধার, বুকে জমাট মৃত্যুর মতো ঠাণ্ডা,  

চাষির হালে বাঁধা স্বপ্ন-

শিল্পীর তুলির আঁচড়ে ওঠে দিগন্তজোড়া চিত্রপট।

ক্লান্ত পথিক তবু পথেই মরে,

সে বাঁচে কেবল এক আশায়—প্রেম।


শিল্পীর তুলিতে আঁকা এক ছবি,

কবির কবিতায় লেখা এক গান,

রাত শেষে ব্যথিত গানের সুর থেমে যায়,

কারো নেই কিছুই বলার, সমাজ আজও গভীর ঘুমে,

দরিদ্র বালক এখনো উপোসে শোয়, অভাবের গল্প মিশে যায়।

তবু মানুষ চায় কেবল এক সান্ত্বনা—প্রেম।


শোষকের দম্ভভরা হাসি, বঞ্চিত জনের দীর্ঘশ্বাস-

মায়ের কোলে মাথা রেখে শান্তি খুঁজি,

বাবার ছায়ায় জীবনের পথ দেখি,

বন্ধুর সাথে সুখ-দুঃখ ভাগ করি,

নিয়তির খেলা বুঝতে গিয়ে জ্ঞানের শেকলে বাঁধি প্রাণ,

স্বপ্নের দামে বিকায় মানুষ, দুঃখ সাজায় নতুন গান।

তবু অন্তর খোজে কেবল এক ভাষা—প্রেম।


আজও রাজপথে দাঁড়িয়ে ক্রীতদাস কয়,‘আমরা কারো নই’

কৃষকের মুখে জমাট কষ্ট, সময়ের খেলা বড় নির্মম!

আকাশের তারা একে একে নিভে যায় যন্ত্রণা বুকে,

বিচারকের গম্ভীর বাক্য, সত্য মিথ্যার কাঁটায় বন্দি,

উদ্বাস্তু শিশুর কান্না শুধু বাতাস বয়ে নিয়ে চলে,

এক বেলা ভাতের স্বপ্ন দেখে সে,

প্রভাতে রোদের আলো ফোটে, আঁধার জমে থাকে চোখে।

তবু সে দেখতে চায় কেবল এক আলোতে—প্রেম।


যুদ্ধক্ষেত্রে পতাকা ওড়ে, কত রক্তে ভিজে একাকার,

কত নারীর স্বপ্ন ছিঁড়ে বীরের গল্প লেখা হয়!

রক্তমাখা সূর্য ওঠে, কিন্তু জীবন ফেরে না,

দুর্বলের কান্না লুকিয়ে থাকে রাজনীতির ছলনায়!

তবু মানুষ হাঁটে কেবল এক পথ ধরে—প্রেম।


শহর, গ্রাম, রাজপথে তৈরি হয় ইতিহাসের চিত্রনাট্য,

একই ঘুর্ণিতে বারবার হারায় মানুষের অস্থায়ী সত্য।

নদীর মত সময় বয়ে যায়, সব হারিয়ে যায় অতলান্তে,

মাটি জানে, জীবন জানে, আর হবে না নীড়।

তবু সে গড়ে কেবল এক স্বপ্ন—প্রেম।


অভিমানী কবির কলম থামে সমাজের ছলনায়,

ভিক্ষুকের রুটি কেড়ে নেয় কেউ,

কিন্তু মন্দির-মসজিদ একসাথে বলে, ‘মানুষ হলো সবার আগে’,

অন্যায়-নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ সভ্যতা, 

তবু সে জাগে কেবল এক বিশ্বাসে—প্রেম।


অরণ্যের পশুও জানে ভালোবাসা, মানুষ কেন বোঝে না?

ক্ষমতার নেশায় বুদ তারা, তবু মাটির ডাক শোনে না।

কৃষকের ঘামে জন্ম নেয় যে ধান, শোষকেরা লুটে খায়,

কবির কলমে জন্ম নেয় যে কাব্য, মুর্খেরা ভুলে যায়,

তবু ঈশ্বরের করুণা বৃষ্টি হয়ে ফেরে আশার আশ্রয়ে।

যা পেয়েছি তার জন্য কৃতজ্ঞ আমি,

যা আছে তাই নিয়ে আমি সুখী,

সর্বশেষ আকাঙ্খা শুধু—প্রেম।

সহ্যের আড়ালে | তাছনীম বিন আহসান | Bangla Kobita

 সহ্যের আড়ালে 

- তাছনীম বিন আহসান 





বাস্তিলের প্রাচীর ভেঙে তারা রক্তে লিখেছিলো ইতিহাস, আমার রক্তপাত শুধু সিগন্যালের গ্লানি, নীরব অগ্নুৎপাত —

জালিয়ানওয়ালার গুলি আজকে ফোটে সেলফির ফ্রেমে,  

লাঞ্ছিত চোখে স্বাধীনতা শ্বাস নেয়, ঠিক মেট্রোর ইস্পাত— 

ট্রয় নগরী পোড়ানোর পর নুতুন এক অ্যাথেন্স জেগেছিলো,  

ভাঙা টেবিলে আমার কবিতার খাতা, ফাঁকা ক্যাফেতে শুন্যতা কাঁপছিলো—  

তবুও আশা ধ্বংসের আগুনে পুড়ে নতুন সূর্য উঠবেই।


প্রাচীন গুহা থেকে বেরিয়ে মানুষ আগুন জ্বেলেছিলো,  

মানুষ আমি খুঁজি মেমোরি কার্ডে লুকোনো আদিম ক্রোধের ছাই— 

মায়ান পিরামিডের চূড়ায় বলি দেয়া নিস্পাপ কত হৃদয়,  

আজকের বলিদান শ্রমিকের, আর সহজ সরলতাই— 

ফরাসি বিপ্লবের গিলোটিনে কাটা মাথা হেসেছিলো ধুলায়,  

আমার গলা ঢোকে নীল টাই-এর ফাঁসে, হাসি দুঃখ ব্যাথায়—  

তবুও আশা ধ্বংসের আগুনে পুড়ে নতুন সূর্য উঠবেই।


স্পার্টাকাসের দাসত্ব-জ্বরা আজকে ডেলিভারি বয়ের ঘামে,  

"রেটিং" নামক নতুন কুঠার কাটছে গর্বের হাড়-মাংস—  

মহাভারতের যুদ্ধশালা আজকে বাসের সিটে, অফিস রাজনীতিতে,  

পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড এখন জীবনের অংশ—  

জলের দামে বিকোয় নীল নদ, ই-কমার্সের কার্নিভালে,  

মোনালিসার হাসিও আজকে ডেলিভারি বক্সে, অফার সেলে —  

তবুও আশা ধ্বংসের আগুনে পুড়ে নতুন সূর্য উঠবেই।

নুতুন মুখ আসবে, নুতুন ইতিহাস রচনা হবে, আরেকবার-

নুতুন করে সবাই সত্যিকারের সমাজ গড়বে আবার।


#তাছনীম

বিপ্রতীপ খেয়াল | তাছনীম বিন আহসান | বাংলা কবিতা

 বিপ্রতীপ খেয়াল

- তাছনীম বিন আহসান



নিস্পাপ সাজতে পারার মাঝেও কৃতিত্ব আছে,

বড় অপরাধী হতে গেলে মায়া মাখা মুখ লাগে,

লাগে হাসতে হাসতে প্রিয় জনের বুকে ছুড়ি চালানোর ক্ষমতা,

ওসব খুব কম মানুষকে দিয়েছেন বিধাতা,

এ পৃথিবীতে সহজ মানুষের সংখ্যাই বেশী,

তবুও অন্যায় দেখে দেখে কেটে যায় দিন,

যুদ্ধ হত্যায় ছেয়ে যাওয়া সবুজ পৃথিবি,

সহজ মানুষের দল সহ্য করেই বাচে,

নির্যাতিত হয় কিছু সংখ্যক আমানুষের কবলে,

তবুও সহজ মানুষের দল দিন শেষে খুশি-


চোখ বন্ধ রাখলেও অন্যায় থেমে থাকে না,

সেই প্রাচীন গুহায়ও ছিলো রক্তের দাগ,

ভাতের হাঁড়ি ফুটলেও থাকে ঢাকনা চাপা,

বুকের গভীরে চাপা কান্না শোনে না কেউ,

ভেঙে যাওয়া খেলনা নিয়ে যে শিশু কাদে,

সে-ই বড় হয়ে খোঁজে একটা অটুট পৃথিবী,

মাটি চষে যে কৃষক ফলায় ফসল,

তার ছায়া পড়ে না শহরের রুক্ষ পথে,

নিরাপদ সন্ধ্যা বলে কিছু নেই বহু জনপদে,

তবুও সহজ মানুষের দল দুঃখ নিয়েই খুশি-


ভবঘুরে যে বৃদ্ধ রোজ বসে নির্দিষ্ট গাছতলায়,

যেন বুদ্ধের মত, নির্বাক—তবু জ্ঞানভারে নুয়ে পরা,

বিপন্ন মুখের ভাষা মুছে যায় সময়ের আবডালে,

তবু লিপিকারেরা লেখে ইতিহাস, ভুল-সঠিক মিশিয়ে,

প্রাচীন সভ্যতাগুলো যেমন নিমেষেই ভেঙেছিল,

তেমনই ভেঙে পড়ে বিশ্বাস, চোখের পলকে,

ঘরে ফেরার যে পথ, সে পথেও কাঁটার বাধা,

মুলত আলোর নিচেই বেশি অন্ধকার থাকে,

সব ভুলে গিয়ে মায়ের কোলে ঘুমায় সন্তানেরা,

আর সহজ মানুষের দল অল্প পেয়েও খুশি-


পাথরে খোদাই করা মুখ মুলত পাথর নয়,

সেও ছিল একদিন মুগ্ধতার কাহিনি,

চিৎকার না করেও প্রতিবাদ করা যায়,

অন্তরে ঘৃনা করা নিম্নস্তরের প্রতিবাদ, 

ছেঁড়া কাঁথায় লুকানো থাকে জগতের সত্য,

বিলাসিতা নয়, শান্তি চায় যেই অন্তর, 

যুদ্ধ শেষে যে কুকুর রাস্তা বেরোয়,

তার চোখে লেখা থাকে ক্ষুধা,

প্রতিদিনই ভাঙে শত প্রেম অগোছালো শহরে,

তবুও হাল না ছাড়া সহজ মানুষের দল খুশি-


পথের ধুলোয় যারা লিখে যায় জীবন,

তাদের নাম লেখা থাকে না কোন বইয়ে,

মুসাফিরের ক্লান্ত মুখেও থাকে কিছু আলো,

যেমন সন্ধ্যার আগে রঙ বদলায় আকাশ।

পথিক জানে রাস্তা কখনো শেষ হয় না,

তবুও হাঁটে—যেন হাঁটাটাই আসল সত্য।

পিছু ফিরে তাকালে দেখা যায় ছায়া,

তবে সামনে হাঁটলে দেখা যায় ভবিষ্যৎ,

দিন শেষে মুলত শুধু নিঃশ্বাসটা সত্য,

তবুও সহজ মানুষের দল ওইটুকুতেই খুশি-

খুঁজে ফিরি | তাছনীম বিন আহসান

  খুঁজে ফিরি

- তাছনীম বিন আহসান 



মিষ্টি সকালে শুদ্ধ রোদে

দেখি বুনো ফুল,

ও দয়াময় ক্ষমা করো

আমার অনেক ভুল।


বনওকরার রঙিন ফুলেরও

আছে রুক্ষ শুষ্ক ফল, 

বিবেক থেকেও অমানুষ 

আমি করি কত ছল।


পাপের সাগরে হারিয়ে আজ

পাইনা কিনার কুল,

ও দয়াময় ক্ষমা করো

আমার অনেক ভুল।


আধার রাতে চোখে দিও

অবাধ অশ্রু জল,

সিজদা যেন হয় সর্বদা

তোমার চরন তল।


গাফুর রহমান রহিম তুমি

আমরা পাপীকুল,

ও দয়াময় ক্ষমা করো

মোদের অনেক ভুল।

কবিতা | মনের মানচিত্র  | তাছনীম বিন আহসান

 মনের মানচিত্র

- তাছনীম বিন আহসান 



কিছু যাত্রা পথের শুরুতেই শেষ হয়ে যায়-

পিছুটান কিংবা ভালোবাসার নামে,

কিছু যাত্রা পথের শুরুতেই শেষ হয়ে যায়-

আলস্য কিংবা সমাজের দামে।


পথিকের পথের নেশা অবিনশ্বর,

হেটে যায় সে অজানা মোহনার পানে,

আপন কে পর করার বাসনায়।

পাগল গুলি খুঁজে পায় পরশ পাথর,

ফুল গুলি খুশি হয় ভোমরার গানে,

শুধু পথিকের সন্ধ্যা হয় অন্য আঙিনায়। 

প্রতিদিন আকাশে পুনর্জন্ম হয় তারার,

জোয়ার আসে জোছনার টানে,

দিন গোনে না কেউ পথিকের আশায়।


কিছু পথ সত্যিই শেষ হয়ে যায়-

দেশ কিংবা ঘৃনার নোংরা অহমে,

কিছু পথ সত্যিই শেষ হয়ে যায়-

কিন্তু পথিক কি সত্যিই থামে?



রাজত্ব | তাছনীম বিন আহসান | কবিতা
রাজত্ব
- তাছনীম বিন আহসান

যে করেই হোক তোকে কাঁদাবোই আমি
যখন তখন ইচ্ছে মত যা না তাই বলে ,
কেননা কাঁদার পর ;
একটু আদর পেয়েই আরো কাছে আসিস
আমার বুকে মুখ লুকিয়ে বেশী ভালোবাসিস
তাইতো কাঁদাই নানা ছলে !!

যে করেই হোক তোকে রাগাবই আমি
গোপনে আর প্রকাশ্যে বাঁকা কথা বলে ,
কেননা রাগলেই ;
তোর তুষার শুভ্র গালে রাঙা সুর্য দেখি
ঐ গোলাপী আভায় অসংখ্য সুখ আঁকি
রাগাই তোকে ভালোবাসি বলে !!

যে করেই হোক তোকে হাসি মুখে রাখবই আমি
হাজার কষ্ট সমস্যা থাকলে বা না থাকলে ,
কেননা তুই হাসলেই ;
আমার পৃথিবীটা আলোয় ভরে উঠে
শত কষ্টেও আমার মুখে হাসি ফোটে
ভালো থাকি তুই হাসলে !!


চিত্র ০১ | তাছনীম বিন আহসান | কবিতা
চিত্র ০১ 
- তাছনীম বিন আহসান

বিস্তৃত সবুজের মাঝে
রক্ত রাঙা শিমুল গাছ আজও আছে ,
শালিক আর বুলবুল পাখি
ফাল্গুনের মিষ্টি সকাল গুলা
আজও মুখর করে বসে শিমুল গাছে !

চোখে সবুজের সৌন্দর্য
গায়ে বসন্তের আদর বাতাস মেখে ,
চাইলে ছুটে চলে যাওয়া যায়
শহর ছেড়ে দুরের কোনো গ্রামে
যান্ত্রিক ব্যাস্ততার জীবন পেছনে রেখে !

শান্ত সরলতা মাখা
চঞ্চল কিশোরীর হাসি ভরা মুখ ,
গ্রাম্য নির্জনতা চুর্ন করে
তার সাথে পাল্লা দেয় কোকিল
শহুরে মনে যেসব কল্পনার সুখ !



:) র.ই.প :) 

no image
হ-য-ব-র-ল (ক) | তাছনীম বিন আহসান | কবিতা

যদি ভুল করেও দুটি চাঁদ উকি দিতো পৃথিবীর আকাশে ,
গোলাপ গুলো হতো দুর্গন্ধযুক্ত আর পাখি গুলো সব বোবা ,
তাহলে আমিও তোমায় চাইতাম না !

যদি রাত গুলোয় আলোর বন্যা হতো আর দিন হতো আঁধার ,
যদি বিল্লিটা ডাকতো ঘেউ ঘেউ আর কুকুরটা মিউ মিউ ,
তাহলে একটা মুহুর্তও তোমায় ভাবতাম না !
অবগাহন | তাছনীম বিন আহসান | কবিতা
অবগাহন  -
তাছনীম বিন আহসান

কিছু স্বপ্ন তোর চোখ দিয়ে দেখি আমি
একটা লেবুর গাছ অন্য দিকে কয়েকটা বেলী
ছোট্ট এই রকম আঙিনা ...
জোছনা রাতে জানালার পাশে আমরা
বাহিরে হাসনাহেনার বড় একটা ঝোপ
নিশ্চুপ গল্পের রাত আর আদর ...

সমস্ত সত্তায় তোকে ধারন করি ভালোবেসে
সকালের সুর্য থেকে খয়েরি বিকেল
পুর্নিমা বা অমাবশ্যায় ...
আঁকার খাতা আর কবিতার প্রতিটা পদ
তোর মায়ায় ধোয়াশা মতন
ভিতর এবং বাহিরে ...



আদিপ্রাণ | মাহিগঞ্জ সাহিত্য সংসদ

মোট দর্শন

যোগাযোগ করুন

আপনার মুল্যবান মতামত দিন